বিলীন হয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ

বিলীন হয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ

বাউফল প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী বাউফলে দেশীয় প্রায় অর্ধশত প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব বিলীন  হয়ে যাওয়ার পথে প্রায়। জলবায়ুর পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসচেতনতা, অবাধে ফসলের জমিতে ক্ষতিকর কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের নিয়মিত ব্যবহার এবং মিঠাপানির অভাবে মৎস্য খনি খ্যাত  অর্ধশত প্রজাতির দেশীয় মাছের অস্তিত্ব এখন বিলীন। নদী,খাল,বিলে  দেশীয় মাছ এখন আগের মতো আর দেশীয় মাছ চোখে পড়ছেন না।
 শহর, বন্দর, গ্রামে গঞ্জে সর্বত্রই দেশীয় মাছের এখন চরম সংকট দেখা দিয়েছে। যা পাওয়া যায় তার দাম ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। তাই  সাধারণ মানুষেরা এখন দেশি মাছের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।  মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, কয়েক দশক পূর্বেও এ অঞ্চলে আড়াইশত প্রজাতির  মাছ ছিল। কিন্তু  নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এসব মাছের অনেক প্রজাতি এখন চোখে পড়ে না। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমের সময় পুকুর, নদী-খাল-বিল থেকে কারেন্ট জালের মাধ্যমে ব্যাপকহারে ডিমওয়ালা মাছ ধরার কারণে দেশীয় মিঠা পানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। তাই কালের পরিক্রমে মাছে-ভাতে বাঙালির ঐতিহ্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
দুই দশক পূর্বে উপজেলায় প্রায় আড়াইশ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ পাওয়া যেত। যার মধ্যে শোল, টাকি, কৈ, গজাল, টেংরা, চিতল, শিং, খয়রা, বাটা, পাইশ্যা, কালিবাউশ, বাইল্যা, কাজলি, সরপুঁটি, পাবদা, খৈলশা, ডগরি, জাবা, ভোলা, বাগাড়, বাশপাতা, ভাঙ্গান, কাইন, দেশী পুঁটি, গোদা চিংড়িসহ অর্ধশত প্রজাতির মিঠাপানির মাছ এখন আর চোখে পড়েনা।
এ সকল মাছ স্বাদে ও পুষ্টি গুনে ছিল ভরপুর। এ অঞ্চলের গ্রামে-গঞ্জের কয়েকশ’ বিল, খাল নদী থেকে এসকল মাছ সংগ্রহ করতো জেলে সম্প্রদায়। সারা বছর তারা মৎস শিকার করে নিজ পরিবারের চাহিদাপূরণ সহ জীবিকা নির্বাহ করত। শুষ্ক মৌসুমে খালে বিলে পানি কমে গেলে চলত মাছ ধরার মহা উৎসব। কারেন্ট জালের ব্যাপকতায় খাল, বিল নদীতে এ মাছের রেনু ধরা পড়ে মাছের প্রজনন প্রচ-ভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জালে ধরা পড়ে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার রেনু মাছ। তাছাড়া বিভিন্ন কারণে পানি দূষণ, জলাশয়ের গভীররা হ্রাস, ছোট মাছ ধরার জন্য কারেন্ট জালের ব্যবহারের কারণেও মাছে প্রজাতি ধ্বংস হচ্ছে।
দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে মৎস্যজীবী তথা সর্ব সাধারণকে সচেতন করে তোলার পাশাপাশি স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ ও মৎস্য সংরক্ষণ আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিতার মাধ্যমেই সম্ভব ।